ISLAMIC TERMINOLOGIES

ISLAMIC RULS-1
ISLAMIC RULS

DEFINITIONS AND ORDERS FOR ISLAMIC RULES

MASAYEL (RULES) OF OZU

MASAYEL OF SHOWERING

MASAYEL OF SALAAH

MASAYEL OF JAKAH

কুরবানীর মাসায়িল

কুরবানী কি?

মনের কুরবানীই হল সবচেয়ে বড় কুরবানী

কুরবানী শব্দের অর্থ হল উৎসর্গ করা। হযরত ইবরাহীম (আঃ) কর্তৃক নিজ ছেলে হযরত ইসমাঈল (আঃ) কে কুরবানী করার দ্বারা হযরত ইবরাহীম (আঃ) এর মনের কুরবানীর মাধ্যমেই কুরবানীর বিধান প্রবর্তিত হয়। তাই মনের কুরবানীই হল সবচেয়ে বড় কুরবানী। ঈদুল আযহার সময় যে কুরবানী করা হয়, সেখানে পশু জবাই করার মাধ্যমে মালের কুরবানী হয়, সেই সাথে মনেরও কুরবানী হয়। এই কুরবানীর পশু জবাই করতে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়। এই অর্থের প্রতি মনের যে মায়া, সেই মায়াকে ত্যাগ করে কুরবানী করতে হবে। কুরবানী করতে গেলে মনের মধ্যে গোস্ত খাওয়ার চেতনাটাই মূল হয়ে দাঁড়াতে চাইবে, মনের এই চেতনাকেও কুরবানী দিতে হবে এবং সম্পূর্ণ আল্লাহকে রাজি খুশি করার নিয়তেই কুরবানী করতে হবে। কুরবানীর পশু ক্রয় করার সময় মনের মধ্যে আসবে, সবচেয়ে দামি পশুটা ক্রয় করবো, কিংবা যেটা ক্রয় করবো, সেটাকে সাজিয়ে পরিয়ে মহড়া দিব, তাহলে মানুষ জানবে যে, অমুকে এই পশুটা কুরবানী দিতে যাচ্ছে। এভাবে মনের মধ্যে নাম প্রচারের চেতনা এসে যেতে চাইবে। মনের এই চেতনাকেও কুরবানী দিতে হবে। এভাবে পশু কুরবানীর সাথে সাথে মনেরও কুরবানী হবে। বরং মনের কুরবানীটিই হল আসল। কারণ, মনের এইসব গলত খেয়াল ত্যাগ না করলে এই পশু কুরবানীর আমলে ইখলাছ থাকবে না। আর কোন আমলে ইখলাছ না থাকলে সেই আমলের কোনই মূল্য নেই। তাই মনের কুরবানী না করে শুধু রক্ত মাংসের পশু কুরবানী করলে তাতে কোন ফায়দা হবে না। কুরআনে কারীমে তাই আল্লাহ পাক এরশাদ করেছেন –

لَنْ يَّنَالَ اللّٰهَ لُحُوْمُهَا وَلَادِمَآءُ هَا وَ لٰكِنْ يَّنَالُهٗ التَّقْوٰي مِنْكُمْ ـ

অর্থাৎ এই কুরবানীর জন্তুর রক্ত মাংস আদৌ আল্লাহর কাছে পৌছে না বরং আল্লাহর কাছে পৌছে তোমাদের তাকওয়া অর্থাৎ তোমাদের মনের ইখলাছ ও আন্তরিকতা।

– সূরা হজ্জ, আয়াত ৩৭

কুরবানীর ফযীলত

কুরবানীর পশুর শরীরে যত পশম থাকে, প্রত্যেকটা পশমের  বদলে এক একটি নেকী পাওয়া যায়।

(মুসনাদে আহমাদ)

 কুরবানী-র দিনে কুরবানী করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত।

(তিরমিযী)

কাদের উপর কুরবানী দেয়া ওয়াজিব

 ১০ই যিলহজ্জের ফজর থেকে ১২ই যিলহজ্জের সন্ধা পর্যন্ত অর্থাৎ কুরবানীর     দিনগুলোতে যার নিকট সদকায়ে ফিতর/ফিতরা ওয়াজিব হওয়া পরিমাণ অর্থ-সম্পদ থাকে তার উপর কুরবানী করা ওয়াজিব।

মুসাফিরের উপর (সফরের হালতে থাকলে) কুরবানী করা ওয়াজিব নয়।

কুরবানী ওয়াজিব না হলেও নফল কুরবানী করলে কুরবানীর ছওয়াব পাওয়া যায়।

কুরবানী শুধু নিজের উপরই ওয়াজিব হয়। মাতা-পিতা, সন্তানাদি ও স্ত্রীর পক্ষ থেকে ওয়াজিব হয় না, তবে তাদের পক্ষ থেকেও কুরবানী করলে তা নফল হবে।

যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, সে কুরবানীর নিয়তে পশু ক্রয় করলে, সেই পশু কুরবানী করা তার উপর ওয়াজিব হয়ে যায়।

যার উপর কুরবানী ওয়াজিব নয়, সে কুরবানীর নিয়তে পশু ক্রয় করলে, সেই পশু কুরবানী করা তার উপর ওয়াজিব হয়ে যায়।

কোনো উদ্দেশ্য পূরণের জন্য কুরবানীর মান্নত করলে, সেই উদ্দেশ্য পূর্ণ হলে, তার উপর (গরীব হোক বা ধনী) কুরবানী দেয়া ওয়াজিব হয়ে যায়।

যার উপর কুরবানী ওয়াজিব, সে কুরবানী না করলে, কুরবানীর দিনগুলো চলে যাওয়ার পর একটা ছাগলের মূল্য সদকা করা ওয়াজিব।

কোন কোন পশু দ্বারা কুরবানী করা যায়

ছাগল, ভেড়া, গরু, মহিষ, দুম্বা ও উট। এই কয় প্রকার গৃহপালিত পশু দ্বারা কুরবানী করা যায়।

কুরবানী-র পশুর বয়স প্রসঙ্গ

ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে পূর্ণ এক বৎসর বয়সের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বার বয়স যদি কিছু কমও হয় কিন্তু এরূপ মোটা তাজা হয় যে, এক বৎসর বয়সীদের মধ্যে ছেড়ে দিলেও তাদের চেয়ে ছোট মনে হয় না, তাহলে তার দ্বারা কুরবানী দেয়া যাবে তবে অন্তত ছয় মাস বয়স হতে হবে। ছাগলের ক্ষেত্রে এরূপ ব্যতিক্রম নেই। ছাগল কোনো অবস্থাতেই এক বৎসরের কম বয়সের হতে পারবে না।

গরু ও মহিষের বয়স কমপক্ষে দুই বৎসর হতে হবে।

উট-এর বয়স কম পক্ষে পাঁচ বৎসর হতে হবে।

কুরবানীর পশুর স্বাস্থ্যগত অবস্থা প্রসঙ্গ

কুরবানীর পশু ভাল এবং হৃষ্ট-পুষ্ট হওয়া উত্তম।

যে পশুর একটিও দাঁত নেই, তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। তবে দাঁত না থাকা সত্ব্যেও ঘাস খেতে সক্ষম হলে তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয আছে।

যে পশুর কান জন্ম থেকেই নেই, তা দ্বারা কুরবানী জায়েয নয়। তবে কান ছোট হলে কুরবানী করা যাবে।

যে পশুর শিং মূল থেকে ভেঙ্গে গিয়েছে, তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়। তবে শিং ওঠেইনি বা কিছু পরিমাণ ভেঙ্গে গিয়েছে, এরূপ পশু দ্বারা কুরবানী করা জায়েয আছে।

যে পশুর উভয় চোখ অন্ধ বা যার একটি চোখ পুর্ণ অন্ধ বা একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি এক তৃতীয়াংশের বেশী নষ্ট, তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়।

যে পশুর একটি কান বা লেজের এক তৃতীয়াংশের চেয়ে বেশী কেটে গিয়েছে, তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়।

অতিশয় কৃশকায় ও দুর্বল পশু, যার এতটুকু শক্তি নেই যে, জবেহের স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে, তা দ্বারা কুরবানী করা জায়েয নয়।

ভাল পশু ক্রয় করার পর এমন দোষ ত্রুটি দেখা দিয়েছে, যার কারণে কুরবানী জায়েয হয় না-এরুপ হলে ঐ পশুটি রেখে আরেকটি পশু ক্রয় করে কুরবানী দিতে হবে। তবে ক্রেতা গরীব হলে সেটাই কুরবানী দিতে পারবে।

গর্ভবর্তী পশু কুরবানী করা জায়েয। যদি পেটের বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায়, তবে সে বাচ্চাও জবেহ করে দিবে। তবে প্রসবের নিকটবর্তী হলে সেরূপ গর্ভবতী পশু কুরবানী দেয়া মাকরূহ।

বন্ধা পশু কুরবানী করা যায়েয।

শরীকের মাসায়িল এবং একটা পশুতে কয়জন শরীক হতে পারে?

ছাগল, ভেড়া ও দুম্বায় এক জনের বেশী শরীক হয়ে কুরবানী করা যায় না। এগুলো একটা একজনের নামেই কুরবানী করা যায়।

গরু, মহিষ ও উটে সর্বোচ্চ সাতজন শরীক হতে পারে। সাতজন হওয়া জরুরী নয়, দুইজন বা তিনজন বা চারজন বা পাঁচজন বা ছয়জন কুরবানী দিতে পারে, তবে প্রত্যেকের অংশ সমান ভাগে ভাগ হতে হবে।

মৃতের নামেও কুরবানী দেয়া যায়।

রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, তাঁর বিবিগণ ও বুযুর্গদের নামেও কুরবানী দেয়া যায় ।

যে ব্যক্তি খাঁটি নিয়তে আল্লাহর উদ্দেশ্যে কুরবানী করে না বরং গোশত খাওয়া বা লোক দেখানো ইত্যাদি উদ্দেশ্যে কুরবানী করে, তাকে অংশীদার বানিয়ে কোন পশু কুরবানী করলে সকল অংশীদারের কুরবানী-ই নষ্ট হয়ে যায়। তাই শরীক নির্বাচনের ক্ষেত্রে খুবই সতর্ক থাকা দরকার।

কুরবানীর পশু ক্রয় করার সময় ক্রেতার শরীক রাখার ইচ্ছা ছিল না, পরবর্তীতে শরীক গ্রহণ করতে চাইলে, শরীক গ্রহণ করতে পারবে তবে ক্রেতা গরীব হলে শরীক গ্রহণ করতে পারবে না।

যার সমস্ত উপার্জন বা অধিকাংশ উপার্জন হারাম, তাকে শরীক করে কুরবানী করলে অন্যান্য সকল শরীকের কুরবানী অশুদ্ধ হয়ে যাবে।

কুরবানীর পশু জবেহ করা প্রসঙ্গে

নিজের কুরবানীর পশু নিজেই জবেহ করা উত্তম। নিজে জবেহ না করলে বা করতে না পারলে জবেহের সময় সামনে থাকা ভাল। মহিলাগণ পর্দা রক্ষা করে সামনে যেতে পারে। পর্দার ব্যাঘাত ঘটিয়ে সামনে না যাওয়াই ভালো।

কুরবানীর পশুকে মাটিতে শুইয়ে তার মুখ কেবলামুখী করে নি¤েœর দু’আ পাঠ করা উত্তম-


اِنِّيْ وَجَّهْتُ وَجْهِيَ لِلَّذِيْ فَطَرَ السَّمٰوٰتِ وَالْاَرْضَ حَنِيْفًا وَّمَاۤ اَنَا۠ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ ـ اِنَّ صَلَاتِيْ وَنَسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ ـ لَا شَرِيْكَ لَهٗ وَ بِذَالِكَ اُمِرْتُ وَ اَنَا۠ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ ـ اَللّٰهُمَّ مِنْكَ وَ لَكَ ـ

অতঃপর بِسْمِ اللّٰهِ اَللّٰهُ اَكْبَرُ বলে জবেহ করবে। কেউ দু’আ পড়তে না পারলে শুধু ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার’ বলে জবেহ করলেও চলবে।
অতঃপর এই দু’আ পড়া উত্তম-


اَللّٰهُمَّ تَقَبَّلْهُ مِنِّيْ كَمَا تَقَبَّلْتَ مِنْ حَبِيْبِكَ مُحَمَّدٍ وَّ خَلِيْلِكَ إِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِمَا الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ ـ

জবেহকারী যদি উক্ত পশুর কুরবানীদাতা না হয়, তাহলে مِنِّيْ এর স্থলে مِنْهُ পড়বে। আর কুরবানীদাতা একাধিক হলে مِنِّيْ এর স্থলে مِنَّا বা مِنْهُ এর স্থলে مِنْهُمْ পড়বে।

কুরবানীদাতা বা কুরবানীদাতাগণের নাম মুখে উচ্চারণ করা বা কাগজে লিখে পড়া জরুরী নয়। আল্লাহ পাক জানেন, এটা কার কুরবানী। সে অনুযায়ীই উক্ত কুরবানী আল্লাহ পাকের দরবারে গৃহীত হবে।

কুরবানীর পশু রাতের বেলায়ও জবেহ করা জয়েয, তবে ভাল নয়।

ঈদের নামাযের পূর্বে কুরবানী করা জায়েয নয়। তবে যেখানে জুমুআ ও ঈদের নামায জায়েয নয়, সেখানে সুবহে সাদেকের পর থেকেই কুরবানী করা জায়েয আছে।

গোশত বন্টনের তরীকা

অংশীদারগণ সকলে একান্নভূক্ত হলে গোশত বন্টনের প্রয়োজন নেই। অন্যথায় বন্টন করতে হবে।

অংশীদারগণ গোশত অনুমাণ করে বন্টন করবে না বরং বাটখারা দিয়ে ওজন করে বন্টন করতে হবে। অন্যথায় ভাগের মধ্যে কম-বেশি হয়ে গেলে গোনাহগার হতে হবে। অবশ্য কোন অংশীদার মাথা, পায়া
ইত্যাদি বিশেষ কোন অংশ গ্রহণ করলে, তার ভাগে গোশত কিছু কম হলেও তা জায়েয হবে। কিন্তু যে ভাগে গোশত বেশী সেভাগে মাথা পায়া ইত্যাদি বিশেষ অংশ দেয়া যাবে না।

অংশীদারগণ সকলে যদি সম্পূর্ণ গোশত দান করে দিতে চায় বা সম্পূর্ণটা রান্না করে বিলাতে বা খাওয়াতে চায় তাহলে বন্টনের প্রয়োজন নেই।

কুরবানীর গোশত খাওয়া ও দান করার মাসায়িল

কুরবানীর গোশত নিজে খাওয়া, পরিবারবর্গকে খাওয়ানো, আত্মীয়-স্বজনকে দেয়া এবং গরীব-মিসকীনকে দেয়া সবই জায়েয। মোস্তাহাব ও উত্তম তরীকা হল- তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজেদের জন্য রাখা, এক ভাগ আত্মীয়-স্বজনকে দেয়া এবং এক ভাগ গরীব-মিসকীনকে দান করা।

মান্নতের কুরবানীর গোশত হলে নিজে খেতে পারবে না এবং মালদারকেও দিতে পারবে না, বরং পুরোটাই গরীব মিসকীনদের দান করে দেয়া ওয়াজিব।

যদি কোনো মৃত ব্যক্তি মৃত্যুর পূর্বে কুরবানীর জন্য ওছিয়াত করে গিয়ে থাকে তবে সেই কুরবানীর গোশতও মান্নতের কুরবানীর গোশতের ন্যায় পুরোটাই দান করা ওয়াজিব।

কুরবানীর গোশত বা বিশেষ কোন অংশ (যেমন: মাথা, পায়া, কলিজা) পারিশ্রমিক হিসাবে দেয়া জায়েয নয়।

কুরবানীর গোশ্ত শুকিয়ে (বা ফ্রীজে রেখে) দীর্ঘ দিন খাওয়াতে কোন অসুবিধা নেই।

কুরবানীর পশুর চামড়া সম্পর্কিত মাসায়িল

কুরবানীর পশুর চামড়া শুকিয়ে বা প্রক্রিয়াজাত করে নিজে ব্যবহার করা জায়েয।

কুরবানীর চামড়া দানও করা যায় তবে বিক্রি করলে সে টাকা নিজে ব্যবহার করা যায় না। দানই করা জরুরি এবং ঠিক ঐ টাকাটাই দান করতে হবে। ঐ টাকাটা নিজে খরচ করে অন্য টাকা দান করলে আদায় হবে বটে, তবে অন্যায় হবে।

কুরবানীর চামড়ার দাম মসজিদ মাদ্রাসার নির্মাণ কাজে বা বেতন বাবত বা পারিশ্রমিক বাবত বা অন্য কোনো নেক কাজে খরচ করা জায়েয নয়। এটা গরীবের হক্ব, গরীবকেই দান করতে হবে।

-তথ্যসূত্র: হেদায়া, বেহেসতী জেওর, আহকামে যিন্দেগী।


আকীকার মাসায়িল

আকীকা করা সুন্নাত।

ছেলে বা মেয়ে জন্মের পর সপ্তম দিনে আকীকা করা মোস্তাহাব। সপ্তম দিনে না করতে পারলে যখনই করা হোক, যে বারে সন্তান জন্ম নিয়েছে তার আগের দিন করবে। যেমন: শনিবার সন্তানের জন্ম হয়ে থাকলে শুক্রবার আকীকা করবে, তাহলেও এক রকম সপ্তম দিনে আকীকা করা হবে; এটাই উত্তম। এ ছাড়াও সুবিধামত যে কোনো দিন আকীকা করা যায়।

সন্তান বালেগ হওয়ার পরও আকীকা করা জায়েয আছে, তবে মৃত্যুর পর আকীকা নেই।

আকীকা করা দ্বারা সন্তানের বালা-মুসিবত দূর হয় এবং সন্তান যাবতীয় বিপদ-আপদ থেকে নিরাপদ থাকে।

ছেলে হলে আকীকায় দু’টো ছাগল বা ভেড়া উত্তম, আর মেয়ে হলে একটা ছাগল বা ভেড়া। কুরবানীর গরু ইত্যাদি বড় পশুর মধ্যে ছেলের জন্য দুই অংশ নেয়া উত্তম আর মেয়ের জন্য এক অংশ। ছেলের পক্ষ থেকে একটা ছাগল বা কুরবানীর এক অংশ দ্বারা আকীকা করলেও চলবে। আর আকীকা না করলেও কোনো দোষ নেই। তবে আকীকা করা সুন্নাত।

যে সকল পশু দ্বারা কুরবানী জায়েয তার দ্বারাই আকীকা জায়েয।

সন্তানের মাথা মুন্ডানোর জন্য মাথায় খুর/ব্লেড রাখার সাথে সাথে আকীকার পশু জবেহ করতে হবে-এরুপ ধারণা ভুল এবং এটা বেহুদা রছম।

আকীকার গোশত মাতা, পিতা, দাদা, দাদী, নানা, নানীসহ সকলেই খেতে পারে।

আকীকার গোশত কাঁচা ভাগ করে দেয়া বা রান্না করে ভাগ করে দেয়া বা দাওয়াত করে খাওয়ানো সবই জায়েয আছে।

কোন কোন ফকীহ বলেছেন, আকীকার পশুর চামড়া বিক্রি করলে তার মূল্য দান করে দেয়াই উচিৎ। যদিও এ ব্যাপারে কুরবানীর চামড়ার অর্থের ন্যায় অত কড়াকড়ি নেই।

-তথ্যসূত্র: হেদায়া, বেহেসতী জেওর, আহকামে যিন্দেগী।


মান্নতের মাসায়িল

কোন ইবাদতজাতীয় মান্নত করলে, যে উদ্দেশ্যে মান্নত করেছে, সে উদ্দেশ্য পূর্ণ হলে ঐ মান্নত আদায় করা ওয়াজিব। উদ্দেশ্য পূর্ণ না হলে মান্নত আদায় করা ওয়াজিব হয় না। আর কোনো উদ্দেশ্য ব্যতীত এমনিতেই আল্লাহর নাম নিয়ে কোনো কিছুর মান্নত করলে তা পূর্ণ করা ওয়াজিব।

শরীআতের খেলাফ মান্নত করলে তা পূর্ণ করা যাবে না। যেমন: মাজারে কোনো কিছু দেয়ার মান্নত করা বা নাচ-গানের মান্নত করা ইত্যাদি।

মীলাদের মান্নত করলে সে মান্নত বাতিল। তা পুরো করার কোনই দরকার নেই।

নির্দিষ্ট গরু, ছাগল বা মুরগী মান্নত করলে সেটাই দিতে হবে। আর যদি নির্দিষ্ট করে না বলে, তাহলে কুরবানীর উপযুক্ত যে কোন গরু বা খাশী দিতে হবে।

নির্দিষ্ট কোন স্থানে দেয়ার মান্নত করলে সেখানেই দেয়া জরুরী নয়, যেমন মক্কা শরীফে বা মদীনায় দেয়ার মান্নত করলে সেখানেই দেয়া জরুরী নয়। অন্য স্থানেও দেয়া যাবে।

নির্দিষ্ট কোন দিনে বা নির্দিষ্ট কোন মিসকীনকে দেয়ার মান্নত করলে, সেই নির্দিষ্ট দিনে বা সেই নির্দিষ্ট মিসকীনকে দেয়া জরুরী নয়। অন্য যে কোনো দিন বা অন্য যেকোন মিসকিনকে দিলেও চলবে।

নির্দিষ্ট কোনো মসজিদে নামায পড়ার মান্নত করলে সে মসজিদেই নামায পড়া জরুরী নয়, বরং যে কোন মসজিদে নামায পড়লে মান্নত আদায় হয়ে যাবে।

যদি কেউ মান্নত করে যে, দশজন হাফেজ বা দশজন আলেমকে খাওয়াবো, তাহলে হাফেজ বা আলেমকে খাওয়ানো জরুরী নয়। দশজন মিসকীনকে খাওয়ালেও চলবে।

মিসকীনকে খাওয়ানোর মান্নত করে থাকলে, সে ক্ষেত্রে দেখতে হবে তার নিয়ত কি ছিল; যদি এক ওয়াক্ত খাওয়ানোর নিয়ত থাকে তাহলে এক ওয়াক্ত খাওয়ালেই চলবে। আর যদি দুই ওয়াক্ত খাওয়ানোর নিয়ত থাকে বা কোন নিয়ত ঠিক না করেই মান্নত করে থাকে, তাহলে দুই ওয়াক্ত পেট ভরে খাওয়াতে হবে।

যদি এক বা একাধিক মিসকীনকে কোনো পরিমাণ নির্দিষ্ট না করেই চাউল, ডাউল ইত্যাদি দেয়ার মান্নত করে থাকে, তাহলে প্রত্যেক মিসকীনকে একটা সদকায়ে ফিতর-এর পরিমাণ দিতে হবে।

কোনো নির্দিষ্ট দিনের রোজা রাখার মান্নত করলে এবং সেই দিন সেই রোজা রাখলে মান্নতের রোজা বলে নিয়ত করুক বা শুধু রোজা বলে নিয়ত করুক বা নফল বলে নিয়ত করুক, মান্নতের রোযাই আদায় হবে। তবে কাযা রোযার নিয়ত করলে কাযাই আদায় হবে। মান্নতের রোযা আদায় হবে না।

কোনো দিন তারিখ নির্দিষ্ট করে মান্নত না করলে, যে কোন দিন সেই মান্নতের রোযা আদায় করা যায়। এরূপ মান্নতের রোযার নিয়ত সুবহে সাদেকের পূর্বেই হওয়া শর্ত।

যদি কয়েকদিন রোযা রাখার মান্নত করে, তাহলে একত্রে রাখার নিয়ত না থাকলে, ভেঙ্গে ভেঙ্গে রাখা যাবে। আর একত্রে রাখার নিয়ত করলে, একত্রেই রাখতে হবে।

এক আল্লাহ ব্যতীত অন্য কারও নামে মান্নত করা জায়েয নয়।

কোনো নির্দিষ্ট দিনে বা নির্দিষ্ট তারিখে বা নির্দিষ্ট মাসে রোযা রাখার মান্নত করলে, সেই নির্দিষ্ট দিনে বা তারিখে বা মাসেই রোযা রাখা জরুরী নয়। অন্য যে কোন সময় রাখা যাবে।

যদি এক মাস রোযা রাখার মান্নত করে, তাহলে পুরো এক মাস লাগাতার রোযা রাখতে হবে।

-তথ্যসূত্র: হেদায়া, বেহেসতী জেওর, আহকামে যিন্দেগী।

CONTACT ME

MOWLANA MUHAMMAD KAMRUZZAMAN

Cell phone: +8801712915947, +8801934123029

imo/Viber/WhatsApp: +8801712915947

Skype ID: quran.teaching.bd@outlook.com

E-mail: kamru.78@gmail.com

error: Content is protected !!